অবশেষে ট্রাম্পের স্বীকৃতি মিলল, জেরুজালেমই হবে ইসরায়েলের রাজধানী

ফিলিস্তিন-ইসরায়েল এই প্রশ্নে সাত দশকের মার্কিন নীতি সরিয়ে ফেলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। 
জাতিসংঘ, আরব ও মুসলিম দেশসহ অন্যান্য মার্কিন-বন্ধুশুলভ আপত্তি আমলেই নিলেন না যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার মুসলমানদের ধর্মভূমি জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
প্রায গত ৬০-৭০ বছর ধরে মার্কিনীদের কাছে এটি ছিল ‘স্পর্শকাতর’ বিষয় হিসেবেই।বিতর্ক এড়াতেই যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেননি।আলোচনার ভিত্তিতে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকটের সুরাহা করার যে মার্কিন-নীতি তাঁর স্পষ্ট ভাবে ট্রাম্পের এই ঘোষণা।
হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া এক বিব্রিতে ট্রাম্প এই স্বীকৃতির ব্যাপারে নিজের দৃঢ় প্রত্যয় এর কথাই পুনর্ব্যক্ত করেছেন, ‘আমি ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে জেরুজালেমকে স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে সকলের সাথে সংকল্পবদ্ধ ছিলাম। কাজটা ঠিকই হয়েছে।’
গত বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পূর্ব সময় জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে প্রবেশের ১০ মাসের মধ্যে তিনি সেই প্রতিশ্রুতিই বাস্তবায়ন করলেন।
ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকট নিয়ে অতীতের সময়ের মার্কিন নীতিকেও নিজের বক্তব্যে তুচ্ছ করেছেন ট্রাম্প, ‘অতীতের অনেক প্রেসিডেন্টই বলেছিলেন যে তাঁরা এটি করতে চান (জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া)। তবে তাঁরা তা করেনি। তাঁরা বাস্তবায়ন এর সাহস পাননি নাকি নিজেদের মতের পরিবর্তন করেছিলেন।
১৯৯৫ সালে ইসরায়েলের রাজধানী তেলআবিব থেকে সরিয়ে জেরুজালেমে নেওয়া হবে—এই মর্মে একটি আইন পাস হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে। কিন্তু এরপর থেকে প্রতি ছয় মাস পরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট একটি আদেশে সই করেন। এর মাধ্যমে এই স্থানান্তর ব্যপারটি ছয় মাসের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে হামাস ট্রাম্পের এই ঘোষণায় তীব্র বিরোধিতা জানিয়েছে। তারা বলেছে এর মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে ‘নরকের দরজা’ খুলে গেল।
তারা আরব ও অন্যান্য মুসলিম দেশকে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে যুক্তরাষ্ট্রের দূতকে নিজ নিজ দেশ থেকে বহিষ্কারের আহ্বান জানিয়েছে।
প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) মহাসচিব ট্রাম্পের এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে ‘পৃথক দুই রাষ্ট্রের চিন্তা-ভাবনার সর্বশেষ আশাটুকুও শেষ হয়ে গেছে।

তিনি মনে করেন, এই ঘোষণার ভিতর দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সমস্যার মধ্যস্থতাকারী হিসেবেও মর্যাদা হারিয়েছে। 

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ট্রাম্পের এই ঘোষণাকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অক্ষা দিয়েছেন। তিনি এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করে বলেন, ‘এটি “সাহসী” ও “ন্যায়-সংগত” সিদ্ধান্ত।’
নেতানিয়াহু অবশ্য আশারুপ করেছেন মুসলমান, ইহুদি ও খ্রিষ্টান
এই তিন ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠীর পুর্ণ্যভূমি হিসেবে জেরুজালেমের যে অবস্থান, ট্রাম্পের ঘোষণায় এর পরিবর্তন হবে না।

BD Google News by BC Sarker

0 comments